প্রতিদিন সবরি কলা খেলে পাবেন এই ৮ উপকারিতা, দেখে নিন
সবরি কলার উপকারিতা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায় আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণের মাধ্যমে। এ কলা সাধারণত পাকা অবস্থায় খেতে দেখা যায়। সবরি কলা আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে যে সকল পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তার সবগুলোই কলার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমরা প্রায় সবাই কলা খাওয়ার উপকার, কোন সময় খেতে হবে সে সম্পর্কে অবগত নয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা সবরি কলা খাওয়ার উপকারিতা, কলার পুষ্টিগুণ এবং কলা খাওয়া সঠিক সময় সম্পর্কে আলোচনা করব।
সবরি কলার উপকারিতা
আমরা নিত্যদিন এমন কিছু ফল খেয়ে থাকি যেগুলোর মধ্যে প্রায় সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে এর মধ্যে কলা অন্যতম। কলা বারোমাসি ফল হওয়ায় এটি প্রায় সবসময় বাজারে পাওয়া যায়। সবরি কলায় রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, শর্করা, চর্বি, লৌহ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি সহ উচ্চমাত্রায় ক্যালরি। মানব দেহের পুষ্টি চাহিদা পরিপূর্ণ করতে এসব উপাদানের গুরুত্ব তুলনাহীন। সবরি কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের যে সকল উপকার সাধিত হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো-
- কলাতে রয়েছে ফাইবার উপাদান যা হজম প্রক্রিয়ায় ভালো কাজ করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ভালো হয়।
- কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম উপাদান। যা আমাদের শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে এবং হাড়কে মজবুত ও শক্ত রাখে।
- কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ সহ প্রতিদিন কলা খাওয়ার ফলে শারীরিক দুর্বলতা এবং শরীরে তাপশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ত্বক কোমল থাকার পেছনে ভিটামিন সি এর ভূমিকা অপরিসীম। সবরি কলায় রয়েছে ভিটামিন সি উপাদান যা আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখে।
- পানি শূন্যতা দূর করতে নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কলা খাওয়ার ফলে শরীরের দূষিত পদার্থগুলো বের হয়ে যায় এবং পানি শূন্যতা দূর করে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করে।
- শরীরের ওজন কমাতে নিয়মিত কলা খেতে পারেন।
- নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং স্মৃতিশক্তি তীব্র হয়।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কলার বিকল্প অন্য কোন ফল কম আছে বললেই চলে। কারণ এতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা প্রত্যেকেই শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রতিনিয়ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে থাকি। এর মধ্যে কলা অন্যতম একটি ফল। যা খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। পুষ্টিবিদদের মতে সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা সবচেয়ে বেশী। তবে একেবারে খালি পেটে কলা খাওয়ায় যাবেনা। এক্ষেত্রে আপনি সকালে নাস্তার সঙ্গে নিয়মিত কলা রাখতে পারেন অথবা সামান্য কিছু খাওয়ার পরে কলা খেতে পারেন। কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকার সম্পর্কে আমরা জেনেছি এখন জানব সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
- আমাদের শরীরে তাপ শক্তি উৎপাদনে ক্যালোরির প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কলা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ফল হওয়ায় প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের শক্তির ঘাটতি পূরণ হয় এবং শরীরকে মজবুত করে।
- প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হওয়ার প্রবণতা অনেক কম থাকে। কলাতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম যা শরীরের অভ্যন্তরে গিয়ে ক্যান্সার কোষ প্রতিরোধে সক্রিয় হয়ে কাজ করে।
- প্রতিদিন সকালে নাস্তার সঙ্গে কলা খেলে আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে এবং ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়
- গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের মানসিক উদ্বেগ অনেকাংশে কমে আসে।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত সকালে কলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্ট সুস্থ থাকে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে তাই অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা অত্যাবশ্যকীয়। তবে আমরা অনেকেই অধিক পরিমাণে ভুল খাদ্য গ্রহণ করি যার ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায়। কলা এমন একটি ফল যার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, শর্করা, পটাশিয়াম সহ উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত উপাদান। যা আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে সুস্থ রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ঠিকই কিন্তু নিয়মিত রাতে কলা খেতে নিষেধ করেছেন। যাদের এজমা, সর্দি, কাশি ও কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে রাতে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আর যাদের এ ধরনের সমস্যা নেই তারা রাতে পাকা কলা খেতে পারেন।
আমরা যখন রাতে কোন পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করি তা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি হিসেবে যুক্ত হয়। যার ফলে আমাদের ওজন বাড়তে সাহায্য করে। কারণ রাতে খাবার গ্রহণের পরে আমরা কোন কায়িক পরিশ্রম করি না যার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরি সঞ্চয় হয়। এছাড়াও যাদের মাংসপেশিতে সমস্যা রয়েছে, শরীর দুর্বল এবং ব্যথা করে তারা রাতে পেশীকে সুস্থ রাখতে কলা খেতে পারেন। কলাতে থাকা প্রচুর ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম পেশির শীতলতা প্রদান করে।
রাতে কলা খাওয়ার ফলে শরীরের ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত দূর হয়। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে শরীর যখন অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন পুষ্টিগুণের ভরপুর একটি কলা খেলে শরীরের নতুন করে শক্তির সঞ্চালন ঘটে। তবে একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় কলা খাওয়াই যথেষ্ট। এছাড়াও যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যাতে কলা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত
দিনে কয়টি করে কলা খাওয়া যাবে এ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন বর্ণনা নেই। তবে একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের জন্য একটি বড় কলা খাওয়াই যথেষ্ট। তবে প্রতিদিন যদি আপনি দুটি করে কলা খান সেক্ষেত্রে অনেক উপকার পাবেন।
প্রতিদিন দুটি করে কলা ছেলে যেসব উপকার পাবেন
- কলায় রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
- পলাতে রয়েছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- যাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত দুইটি কলা খাওয়ার ফলে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি কমে এবং লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ ঠিক রাখে।
স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url