প্রতিদিন সকালে মধু-তুলসী খেলে কি হয়? তুলসী পাতার উপকারিতা

তুলসী ও মধুর সংমিশ্রণ চমৎকার একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দ্রুত কাশির উপশম হয়। মধু ও তুলসী পাতা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমনের ঝুঁকি কমায়। তুলসী ও মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। এটি ত্বকের এলার্জি কমায় এবং ত্বককে অধিকাংশে প্রশমিত করে। খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা এবং মধু ও তুলসী পাতার সংমিশ্রণ উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

 

মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা

মধু ও তুলসী পাতার গুনাগুন বহুবিধ। স্বাস্থ্যের গঠন আকৃতি এবং স্বাস্থ্য কে নীরোগ রাখতে চাইলে সকালে খালি পেটে মধু ও তুলসী পাতার সংমিশ্রণে তৈরি মিশ্রণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে চার থেকে পাঁচটি তুলসী পাতা নিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। মিশ্রণ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। এর ফলেঃ-

রোগ প্রতিরোধ বাড়ায়
মধু -তুলসী পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যার কারণে প্রাচীনকাল থেকে মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা স্বীকৃতি লাভ করে আসছে।

কাশি কমায়
মধু -তুলসী চমৎকার একটি ঘরোয়া উপাদান কাশি কমানোর জন্য। মধু ও তুলসী পাতার মিশ্রণ শরীরের বিভিন্ন ভাইরাস থেকে রক্ষা করে যার ফলে কাশি অতি দ্রুত কমে যায়।

ঠান্ডা কমাতে
মধু -তুলসী পাতায় বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান শরীরকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে যার ফলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়।

এলার্জি দূর করে
মধু -তুলসী তে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। এটি ত্বককে প্রশমিত করে এবং শ্বাসতন্ত্রের সহ বিভিন্ন ধরনের এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

কিডনির পাথর দূর করে
মধু -তুলসী মিশ্রণ কিডনির বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে এবং কিডনিকে সুরক্ষিত করে। যার ফলে কিডনির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং কিডনির পাথর দূর করতেও সক্ষম।

খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনার জন্য অনন্যা একটি সমাধান হতে পারে তুলসী পাতা। আপনি যদি নিয়মিত সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা খান তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। তুলসী পাতাতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিবায়োটি ক ছুড়িকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা এর জন্য প্রাচীনকাল থেকে স্বীকৃতি লাভ করে আসছে।

খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার হলে শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বৃদ্ধি পায় না এর সঙ্গে এলার্জিজনিত সমস্যা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, মানসিক চাপ কমানো সহ শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার অন্যতম একটি সমাধান হতে পারে নিয়মিত তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া।

তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

বিশেষজ্ঞদের মতে তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টিবায়োটিক যৌগ যা শরীরের বিভিন্ন ক্রনিক রোগব্যাধি থেকে সুরক্ষা দেয়। যার ফলে বহুকাল থেকে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। তবে তুলসী পাতা খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় না থাকলেও সকালে খালি পেটে চার থেকে পাঁচটি পাতা নিয়মিত চিবিয়ে খেলে শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাহির থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়াও সবথেকে ভালো মাধ্যম হলো মধু-তুলসী এর মিশ্রণ নিয়মিত খাওয়া।

মধু-তুলসী পাতার মিশ্রনে রয়েছে পুষ্টি ও ভিটামিন। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে পূর্বের তুলনায় আরো মজবুত ও শক্তিশালী করে। এ বিষয় সম্পর্কে আমরা উপরে মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক

তুলসীর অনেক গুন কিন্তু সঠিক নিয়ম মেনে না খেলে হিতে বিপরীত ঘটতে পারে। খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে ঠিক একইভাবে তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আয়ুর্বেদদের মতে তুলসির পাতায় রয়েছে অধিক পরিমাণে পারদ ও আয়রন। তাই যখন তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া হয় সে সময় তুলসির পাতা থেকে মিনারেল নির্গত হয় যা দাঁত দ্রুত ক্ষয় করে।

তুলসির পাতা সামান্য এসিডিও কিন্তু আমাদের মুখ খারাপ জাতীয়। তাই তুলসির পাতা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও তুলসীর পাতায় সামান্য পরিমাণে আর্সেনিকের পরিমাণও লক্ষ্য করা যায় যার ফলে দাঁত দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তবে এর প্রভাব শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে লক্ষ্য করা যায়। আপনি চাইলে মধু-তুলসী এর মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন এতে করে মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতার সম্পূর্ণ ফল পাবেন।

তুলসী পাতার ব্যবহার

তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা পূর্বে জেনেছি। কিন্তু তুলসী পাতার ব্যবহার কি শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে? আসলে এ ধারণাটির সম্পূর্ণ ভুল। হিন্দু ধর্মের মত অনুসারে তুলসী একটি পবিত্র গাছ। এর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা তুলসী গাছকে পুজো করে এবং তাদের মত অনুসারে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া ঠিক নয়।

তবে তুলসী পাতায় বিদ্যমান ভিটামি্‌ন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিবায়োটিক সহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সহ শরীরকে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি এবং শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা থেকে সুরক্ষা দেয়। আর তুলসির পাতা সব থেকে ভালো কাজ করে মধু-তুলসীর সংমিশ্রণের তৈরি উপাদানের মাধ্যমে।

তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা অপরিসীম। তুলসির পাতায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টিবায়োটিক উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ঠান্ডা জনিত সমস্যা এবং ক্রনিক রোগসমূহ যেমন শ্বাসতন্ত্রের এলার্জিজনিত সমস্যা সহ কাশি কমাতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তুলসীর পাতা। এছাড়াও তুলসীর পাতায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে প্রশমিত করে এবং এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

তবে শুধু তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে শরীরের যতটা সুরক্ষা প্রয়োজন তার তুলনায় যখন মধু-তুলসীর সংমিশ্রণ করা হবে তখন এর দ্বিগুণ ফল পাওয়া যাবে। মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা পূর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তবে তুলসী পাতার উপকারিতা রয়েছে তুলসী পাতার অপকারিতা নেই এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।

আয়ুর্বেদিক দের নিকট প্রাচীনকাল থেকেই তুলসী পাতার গুনাগুন এবং কার্যকারিতার জন্য স্বীকৃতি লাভ করে আসছে। কিন্তু তুলসীর পাতাতে রয়েছে পারদ ও আইরন। যখন আমরা নিয়মিত তুলসির পাতা চিবিয়ে খায় সেসময় মুখের ভিতরে মিনারেল নির্গত হয় যার ফলে দাত দ্রুত ক্ষয় হয়। যার ফলে দেখা যায় তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোয় রয়েছে। ক্ষতিকর দিক থেকে বাচার উপায় হলো সঠিক মাধ্যম অবলম্বন করা।

তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়

তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে নিয়মিত সকালে তুলসী খাওয়ার অভ্যাস করলে সর্দি কাশি সহ হজমের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তুলসী শরীরের পিএইচ মান ঠিক রাখে যার ফলে ত্বককে প্রশমিত করা এবং এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় তাই নিয়মিত তুলসীর পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

উপসংহার

তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা পূর্বে জেনেছি এবং মধু ও তুলসী করে খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় যে বিষয় সম্পর্কে আমরা পূর্বে ধারণা পেয়েছি। তুলসীতে বিদ্যমান বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ শরিকের সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা দিতে পারে অর্থাৎ তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে তা ক্ষয় রোগ দেখা দিতে পারে এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই তুলসী পাতা খাওয়ার পূর্বে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url