ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা ও ড্রাগন ফলের খোসা দিয়ে রূপচর্চা

ড্রাগন ফলের খোসা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যেমন রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়, হার্ট সুস্থ রাখে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য, চুল পড়ার সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে ড্রাগন ফলের খোসা বেশ উপকারী। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনি যদি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক, ড্রাগন ফলে ফেস প্যাক তৈরি সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

ড্রাগন ফলের উপকারিতা 

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এই ড্রাগন ফলটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। মূলত এই ফলটি বিদেশী হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষকেরা চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও অধিক পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ হয় বাচ্চা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সকলের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। 

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ড্রাগন ফলের জুড়ি মেলা ভার। ড্রাগন ফলের খোসা খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য, চুল পড়া রোগ নিরাময়ের সহায়তা করে। কে পাঠক অনেকের ধারণা ড্রাগন ফল খেলে পায়খানা লাল হয় এই বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে। আশা করছি ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে উপকৃত হবেন। 

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক 

প্রিয় পাঠক ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জানার পূর্বে ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত হই। ড্রাগন ফল সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ার পরেও এই ফলের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
পেটের সমস্যা: ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে অনেকের পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং ডায়রিয়া সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সমস্যা অস্থায়ী হয়, তবে তীব্র পেটের সমস্যা অনুভব করেন তাহলে ড্রাগন ফল খাওয়া বন্ধ রাখুন এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 
এলার্জির সমস্যা: ড্রাগন পুষ্টিকর ফল হওয়ার পরেও অনেকের এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের চর্মরোগ বা  এলার্জি জনিত সমস্যা রয়েছে তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ড্রাগন ফল খাবেন।
ডায়রিয়ার সমস্যা: অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে পেট খারাপ হতে পারে যার ফলে আপনি ডায়রিয়া সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। 

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা

আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন ফল খাওয়ার পরে সেই ফলের খোসা ছেড়ে দেই। এর প্রধান কারণ ফলের খোশার গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা অবগত নয়। তেমনই ড্রাগন ফলের খোসাটা ফেলে দেই। কিন্তু আমরা কেউ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। ড্রাগন ফলের খোসা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বকে ব্যবহার করার ফলে বয়সের ছাপ কমিয়ে আনে এবং ত্বকে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে। 

যেভাবে ড্রাগন ফলের খোসা ব্যবহার করবেন। প্রথমে কয়েকটি ড্রাগন ফলের খোসা নিবেন এবং তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিবেন। এরপর একটি করে খোসা নিয়ে ছোট ছোট অংশে পরিণত করবেন এবং শক্ত অংশটুকু ফেলে দেবেন। ড্রাগন ফলের খোসার ভেতরের অংশে যে শ্বাসটুকু রয়েছে সেগুলো বের করে নিবেন। 

যাদের ত্বকে প্রচুর পরিমাণে দাগ, ব্রণ অথবা বয়সের ছাপ পড়েছে তারা চাইলে প্রতিদিন ড্রাগন ফলের খোসার ফেসপ্যাক টা ব্যবহার করতে পারেন। করে আপনার মুখের সমস্যা চিরতরে দূর হয়ে যাবে। ড্রাগন ফলের ব্যবহার করার পরে ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে। আশা করছি ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। 

ড্রাগন ফলের ফেসপ্যাক যেভাবে তৈরি করবেন 

ড্রাগন ফলের ফেসপ্যাক তৈরি করতে প্রথমে কয়েকটি ড্রাগনের ছোট ছোট খোসা নিয়ে নিন। এরপর সেগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারকৃত খোশাগুলো এবার ব্লেন্ড করে ফেলুন। যদি আপনার কাছে ব্লেন্ডার না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে শীল এবং পাটার ব্যবহার করতে পারেন। এরপর আপনাকে যেটা করতে হবে এর সাথে কাঁচা দুধের মিশ্রণ করতে হবে। ভালোভাবে মিশ্রণ করার জন্য কাঁচা দুধ এবং ড্রাগন ফলের খোসার ব্লেন্ড আবার একসাথে ব্লেন্ডারে দিন। 

এরপর ব্লেন্ড করা উপাদানগুলো একটি কৌটায় নিয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত না ক্রিম ভাব আসবে নাড়াতে থাকুন। আপনি চাইলে এখানে গোলাপ জলের মিশ্রণ করতে পারেন। এরপরে সামান্য পরিমাণের নারিকেল তেল অ্যাড করে নিবেন এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল থাকলে সেটি ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা নারিকেল তেল বাদ দিতে পারেন। এরপরে আইসক্রিম ফ্রাইডে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। আইসক্রিমের আকার ধারণ করার পরে রেগুলার একটি করে আইসক্রিম নিয়ে রূপচর্চায় ব্যবহার করুন।
 

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা 

ড্রাগন ফলে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যেটি ত্বকের ফ্রি রেডিক্যাল দূর করে মুখে বয়সের ছাপ কমিয়ে আনে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হয় ড্রাগন ফল খেলে ত্বক উজ্জ্বল এবং মসৃণ হয়। এছাড়াও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা হলো মুখের ব্রণ দূর করে। যাদের মুখে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা ড্রাগন ফলের ফেসপ্যাক প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। 

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষ মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ছিল ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা নিয়ে। যারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন তারা চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন। এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোন মতামত জানানোর থাকে আপনি চাইলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটি জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url