যেসব রোগ সাড়াবে বেল- বেলের উপকারিতা,অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম।
মিনহাজ
২৩ সেপ, ২০২৪
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত সকল তথ্য এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে
আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব। প্রিয় পাঠক গরমে গোলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে
যাচ্ছে এমন অবস্থায় আমরা বিভিন্ন ফলের শরবত পান করে থাকি।এর মধ্যে অন্যতম এবং
সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক বেলের শরবত।
বেল পছন্দ নয় এমন মানুষের সংখ্যা
তুলনামূলকভাবে অনেক কম বললেই চলে। কখন ও কিভাবে বেল খেলে আমরা বেলের সবচেয়ে
বেশি উপকারিতা পাব এবং সঠিক নিয়মে কিভাবে বেল খাব সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে
সম্পন্ন আর্টিকেল পড়ুন।
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং খেতে সুস্বাদু একটি ফল হল বেল। বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
অপরিসীম। পুষ্টির এক অনন্য উৎস বলা হয় বেলকে। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন
এবং ভিটামিন এ ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ফসফরাস সহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ
পদার্থ। যেগুলো আমাদের শরীরের রোগ নিরাময়িক হিসেবে কাজ করে এবং শরীরকে বিভিন্ন
রোগ থেকে রক্ষা করে।
বেলের পুষ্টিগুণঃ বেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং ভিটামিন এ,
ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ফাইবার সহ
বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ যার শরীর কে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ বেলের মধ্যে বিদ্যমান মেথানল নামক উপাদান রক্তে
সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের
ক্ষেত্রে বেলের উপকারিতা অপরিসীম।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরঃ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে বিশেষ করে মল
পরিষ্কার হয় না তারা নিয়মিত বেলের শ্বাস বের করে চিনি দিয়ে বেলের শরবত করে
খেলে মল পরিষ্কার হয় এবং পূর্বের তুলনায় নরম হয়। তাই আপনার জন্য বেলের
শরবত হতে পারে সবচেয়ে উত্তম শরবত।
ডায়রিয়া নিরাময়ঃ যদি আপনার ঘন ঘন ডায়রিয়ার সমস্যা হয়ে থাকে
সেক্ষেত্রে আপনি কাঁচা বেল খেতে পারেন। স্লাইস করে রোদে শুকিয়ে এরপরে গুড়া করে
গরম পানির সঙ্গে চিনি মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে অনেকাংশে কমে আসে।
ত্বক ভালো রাখেঃ বেল পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে থাকা ভিটামিন ত্বকের
বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চাহিদা এবং ঘাটতি পূরণ করে যার ফলে ত্বক পূর্বে তুলনায়
মসৃণ এবং ব্রণ ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে ত্বককে ভালো রাখে।
স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধঃ বর্তমানে স্কার্ভি একটি বিরাট সমস্যা হয়ে
দাঁড়িয়েছে। মূলত ভিটামিন সি এর অভাবে স্কার্ভি রোগের সৃষ্টি হয় যা দাঁতকে
দ্রুত ক্ষয় করে। বের হল ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস তাই নিয়মিত বেল
খেলে স্কার্ভি রোগ করা সম্ভব।
হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ
শরীর স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতিঃ বেলে বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট
উপাদান রেডিকেলস দূর করে এবং বার্ধক্য এর সাপ পড়তে দেয় না যার ফলে যৌবন ধরে
রাখে।
পাকা বেল খাওয়ার উপকারিতা
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা পূর্বে জেনেছি কিন্তু পাকা বেল খাবার
উপকারিতা সম্পর্কে জানা হয়নি। চলুন তাহলে আপনার সঙ্গে পাকা বেল খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি। মূলত পাকা বেল পাকস্থলীর আলসার, পাইলস রোগের
ওষুধ হিসেবে কাজ করে। পাকা বেলের শ্বাসে যে ফাইবার উপাদান বিদ্যমান
রয়েছে তা আলসার উপশম এর সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার
পাকা বেলের শরবত করে নিয়মিত খান তাহলে আলসার উপশম হবে। এছাড়াও বেলের
পাতা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খেলে আলসার উপশম হয়।
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতার গুনাগুনের শেষ নেই। কিন্তু গর্ভ অবস্থায় বেল খাওয়া
যাবে কিনা সে বিষয়ে অনেকেই জানতে ইচ্ছুক। মূলত বেলে রয়েছে বিভিন্ন
ধরনের ভিটামিন যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে
সুস্থ সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় একজন মা যদি পরিমাণ মতো বেল খেয়ে থাকেন
সেক্ষেত্রে গর্ভে থাকা সন্তান বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের পূরণ করতে পারবে এবং
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হবে। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নাই সে ক্ষেত্রে একজন ভালো
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো বেল খাওয়া উত্তম।
খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা
দিনের শুরুতে খালি পেটে বেলের শরবত খেলে দ্রুত শরীর এর ভিটামিন এবং পুস্টি শোষণ করে নেই।যার ফলে অধিক কার্যকর হলো সকালে খালি পেটে বেল খাওয়া। তবে বেশি পরিমান বেল খাওয়ার ফলে পেটে ব্যথা হতে পারে।
খালি পেটে বেল খাওয়ার উপযুক্ত প্রক্রিয়া হল বেলের সাচ এড়িয়ে নিয়ে এর সঙ্গে চিনি
মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়া। এছাড়া পাকা বেল এর মধ্যে হালকা লবণ মিশিয়ে আপনি
খেতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত টাকা বিল খেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বেঁচে থাকা
ভিটামিন এ ভিটামিন সি ফাইবার ও খনিজ পদার্থগুলো আপনার শরীরের রোগ নিরাময়
করতে সাহায্য করবে এবং বিশেষ করে পুষ্ট কাটিং এর সমস্যা দূরীভূত করতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব
নয়।
পাকা বেল খাওয়ার অপকারিতা
প্রত্যেকটি উপাদানের এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তবে বেল খাওয়ার ক্ষেত্রে
তেমন কোন অপকারিতা নেই। কিন্তু আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন
সে ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা হতে পারে এবং পথ হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই
অতিরিক্ত বেল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে এবং বেল খাওয়ার পরে ভারী খাবার খাওয়া
থেকে বিরত থাকুন কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করার পরে ভারী খাবার খান। অবশ্যই যে
কোন ফল খাবার পূর্বে একজন ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে লেখক এর মন্তব্য
বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা সবকিছু জেনেছি। রেলের উপকারিতা অপরিসীম
এবং অপকারিতা খুবই সামান্য। বেলে থাকা ভিটামিন যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী
ঠিক একইভাবে অতিরিক্ত বেল খাওয়ার ফলে শরীরে পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই
অবশ্যই বেল খাওয়ার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। তবে আপনি
যদি ভালো লাগার জন্য সে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি নির্দেশ খেতে পারেন।
স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url