গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন।

গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।আমড়া সকলেই কম বেশি আমরা খেতে পছন্দ করি। কিন্তু  আমড়া খেলে কি কি উপকার হতে পারে বাকি ধরনের ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই। চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে এই বিষয়ে কিছু ধারণা নেই।

তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমার সঙ্গে থাকেন তাহলে আমরা খাওয়ার অপকারিতা গর্ভাবস্থায় আমরা খাওয়ার উপকারিতা বা আমরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে যাচ্ছেন।

নিচে যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুনঃ

গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা

আমড়া মূলত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল। এতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারে আসে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং শরীরের যে সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি রয়েছে সেই ঘাটতি গুলো পূরণ করতে সাহায্য করে। চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

  • শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ বর্তমানে পৃথিবীতে সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পিছনে মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। মূলত আমড়া রয়েছে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়া একজন স্বাভাবিক মানুষের দৈহিক ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলেই চলে সেখানে ১০০ গ্রাম আমড়াই ভিটামিন সি থাকে ২৬.৪৬ মিলিগ্রাম।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃআমড়া মূলত খাদ্য আস যুক্ত খাবার। বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে অনেক সময় দেখা যায় তারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের ভোগে। সে ক্ষেত্রে একজন মা যদি খাদ্য আশ খাবার গ্রহণ করে এবং মায়ের বুকের দুধ খাওয়ায় সেক্ষেত্রে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব। প্রতি 100 গ্রাম আমড়াই রয়েছে ৩.৬ মিলিগ্রাম খাদ্য আশ।
  • গর্ভবতী মায়ের রক্ত শূন্যতা দূর করেঃ আমাদের দেশের প্রায় ৯০ ভাগ গর্ভবতী মা গর্ভকালীন সময় রক্তশূন্যতায় ভোগে। মূলত রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা যায়।আমড়া তে থাকা ভিটামিন সি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং রক্তশূন্যতার সমস্যা থেকে গর্ভবতী মাকে রক্ষা করে।

    গর্ভস্থ শিশু তখনই ভালো থাকে যখন মা ভালো থাকেন। গর্ভকালীন সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল প্রি একলামশিয়া। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া, পানি আসা সহ প্রসাবে ইনফেকশন। ভিটামিন সি প্রি একলামশিয়া প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই বলা যায় গর্ভাবস্থায়  আমড়া খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম।
  • শিশুর ত্বক কোমল ও মসৃণ করেঃ বাচ্চা কালো নাকি ফর্সা অথবা কোমল মসৃণ হওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে স্রষ্টার উপরে। কিন্তু বাচ্চার ত্বক সুস্থ রাখার জন্য এবং বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভিটামিন সি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায়  আমড়া খেলে বাচ্চা ত্বক কোমল হয় এবং বাচ্চারা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • শিশুর হাড় মজবুত করেঃ গর্ভাবস্থায় শিশু সম্পূর্ন আপনার ওপরে নির্ভরশীল অর্থাৎ তার যে সকল পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন সবকিছু আপনার কাছ থেকে গ্রহণ করবে। তাই সকল পুষ্টি উপাদান আপনার ভিতরে মজুদ থাকা প্রয়োজন। আপনি যদি পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এ সকল খনিজ উপাদানের অভাবে ভোগেন তাহলে বাচ্চার হার মজবুত নাও হতে পারে ফলে হারের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমড়া তে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে এ সকল খনিজ উপাদান সকল সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।

আমড়া খাওয়ার নিয়ম

আমড়াএকটি সুস্বাদু ফল। আমড়া আমরা সকলেই কম বেশি পছন্দ করি। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান কিন্তু আমরা যদি সঠিকভাবে  আমড়া না খেয়ে থাকি তাহলে সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পোস্ট উপাদান আমাদের শরীরের ভিতরে গ্রহনীয় নাও হতে পারে। চলুন জেনে নেই সঠিক নিয়মে কিভাবে আমরা খাবেন এবং একদিনে কতটি আমরা খাওয়া প্রয়োজন।

আপনি যদি ছোট সাইজের  আমড়া নির্বাচন করেন সে ক্ষেত্রে তিনটি এবং মাঝারি বা বড় সাইজের  আমড়া নির্বাচন করলে যথাক্রমে দুইটি ও একটি করে  আমড়া খেতে পারেন। মূলত সকাল ও সন্ধ্যার মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা খাওয়ায় উত্তম এবং খাবার আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পরে অথবা বিকালের নাস্তা হিসেবে আমরা খেতে পারেন।

কোন ধরনের আলাদা মসলা অর্থাৎ লবণ ঝাল ইত্যাদি যুক্ত না করে যদি  আমড়া খাওয়া যায় সেক্ষেত্রে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। অর্থাৎ একটি  আমড়া প্রথমে কেটে এরপরে চিবিয়ে চিবিয়ে কোন মসলাযুক্ত না করেই খেয়ে ফেলল আপনি গ্রহণ করতে পারবেন।

আমড়া খাওয়ার অপকারিতা

আমরা উপরে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে জিনিসের উপকারিতা রয়েছে সেই একই জিনিসের অপকারিতা ও থাকতে পারে। তবে আমড়া ফলের ক্ষেত্রে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু আমাদের সবসময় একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে আমড়া খেয়ে ফেললে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত আমরা খেয়ে ফেলার ফলে পেটে ব্যথা, বদহজমসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

তাই গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে একইভাবে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে।

আমড়া খেলে কি ক্ষতি হয়

আমরা টক জাতীয় সুস্বাদু ও মিষ্টি একটি ফল। আমরা সকলে এটি খেতে ভীষণ পছন্দ করি। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান খনিজ পদার্থ সহ এনটিঅক্সিডেন্ট যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই কিন্তু যখন অতিরিক্ত পরিমাণে আপনি আমড়া খেয়ে ফেলবেন তখন শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে যাদের ডায়রিয়া বমি বমি ভাব বা পেটে ব্যথা সহ বদহজমের সমস্যা রয়েছে তারা আমরা খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন। কারণ আমড়া খাওয়ার ফলে আপনাদের পেটে ব্যথা বা ডায়রিয়া সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমড়া ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস বলা যায়। আমরা অনেকেই  আমড়া ফল কে চিনি কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে জানে না চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সকল গুনাবলী সম্পর্কে। আমড়া বর্ষাকালীন ফল এতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং শরীরকে সুস্থ সবল করে তোলে।

আমড়া খাওয়ার ফলে মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও প্রসাবের ইনফেকশন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটায়, মুত্রবদ্ধ হিসেবে কাজ করে, হৃদরোগ প্রতিহিত করে। আপনি বাজারে এটি সল্প দামে পেয়ে গেল এর গুনাবলী সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারবেন না।

দৈনিক যদি একটি ব্যক্তি এই ফলটি খেয়ে থাকে তাহলে তার শরীরের ভিটামিন সি এর ৫০ ভাগ পূরণ হয়ে যায়। কারণ প্রতি ১০০ গ্রাম  আমড়া তে রয়েছে ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আপনি যদি সারা দিনে একটি  আমড়া খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের প্রায় ৪৬.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও  আমড়া তৈরি হয়েছে আইরন যা আপনার শরীরের ৩৫% আয়রনের ঘাটতি পূরণে সক্ষম। আমড়া রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তস্বল্পতা দূর করে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

গর্ভাবস্থায়  আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরে জেনেছি আবার এর কিছু অপকারিতা থাকতে পারে সে সম্পর্কে অবগত হয়েছে। গর্ভকালীন সময় একজন মায়ের জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় এর জন্য এই সময়টাতে কখনোই কোনোভাবেই ভুল খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না। তাই গর্ভাবস্থায় একজন মা যে খাবার গ্রহণ করুক না কেন সেটি অবশ্যই সার্টিফাইড একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

কারণ শারীরিক অবস্থা আলাদা হতে পারে। এবং একজন ডাক্তারি কেবল তার শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে কোন খাবার গ্রহণ করা তার জন্য সেই সময় বলতে পারবেন। তাই গর্ভাবস্থায় আমড়া খাবার পূর্বে একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন। আমরা শুধু এর উপকারিতার দিক নিয়ে আলোচনা করেছি কিন্তু আপনার জন্য খাওয়া কতটা উত্তম হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত নয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url