দূর্বা ঘাসের উপকারিতা এবং রসের নানান গুন জানলে আপনিও অবাক হবেন।
দূর্বা ঘাসের উপকারিতা সম্পর্কে ডক্টর রাজেশ শেখর জানান এটি শরীরের ভেতরে
এবং বাহিরের সকল রোগের কার্যকারী ঔষধ হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও প্রাচীনকাল
থেকে হিন্দু ধর্মের মানুষেরা দূর্বা ঘাসকে পবিত্র মেনে এসেছে।কারণ তারা
তাদের প্রত্যেক দেবতার পূজায় দুর্বা ঘাসের ব্যবহার করে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া
যাক কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে দূর্বা ঘাসের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুনঃ
- দূর্বা ঘাসের উপকারিতা কি
- দূর্বা ঘাসের বৈজ্ঞানিক নাম
- দূর্বা ঘাস চুলের যত্নে
- দূর্বা ঘাসের অপকারিতা
- দূর্বা ঘাস চাষ
- দূর্বা ঘাসের রস খেলে কি হয়
- দূর্বা ঘাস কেন পূজায় লাগে
- আমাদের কথা
দূর্বা ঘাসের উপকারিতা
আয়ুর্বেদ তথ্য অনুসারে দূর্বাঘাস খেতে কষা এবং মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়। এতে
রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম সহ পর্যাপ্ত পরিমাণে
ভিটামিন। এটি সাধারণত মুখের ঘা সহ শরীরের অনেক ধরনের রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। পিত্তথলি ও কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও
যকৃৎ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পাকস্থলী ও যৌন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে বেশ
কার্যকরী।
দূর্বা ঘাসের বৈজ্ঞানিক নাম
দূর্বা ঘাসের বৈজ্ঞানিক নাম: Cynodon dactylon.
দুর্বা ঘাস কে বারমুডা ঘাস বলা হয়ে থাকে। এটি বিশ্বের আফ্রিকা ইউরোপ আমেরিকার সহ
এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে দেখা যাই। এছাড়াও দূর্বা ঘাস বিশ্বের
প্রত্যেকটি মহাদেশে আলাদা আলাদা নামে পরিচিত।
দূর্বা ঘাস চুলের যত্নে
বর্তমান সময়ে চুল পড়ার একটি সাধারণ রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার কাছে অনেকেই বলে
তারা চুল পড়া রোধের জন্য হাজার হাজার টাকা ফুরিয়েছে এবং অনেকেই জিজ্ঞেস করে চুল
পড়া কি করে রোধ করা সম্ভব আমি তাদেরকে একটি পরামর্শ দিই দূর্বা ঘাসের
ব্যবহার।কারণ দূর্বা ঘাসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন ও পটাশিয়াম যা দ্রুত চুল
পড়া রোধ করে এবং চুল ঘন ও লম্বা করে তুলতে সক্ষম। আর এটি সম্পূর্ণ
প্রাকৃতিক উপাদান হয় তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ভয় থাকে না। কিন্তু অনেকের
ত্বকের পিএইচ মানের ক্ষেত্রে তারতম্য দেখা দিতে পারে এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ
নিয়ে ব্যবহার করাই উত্তম।
দূর্বা ঘাসের অপকারিতা
এতক্ষণ আমরা জানলাম দূর্বা ঘাসের উপকারিতা। তো আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই
পারে দূর্বা ঘাসের শুধু কি উপকারিতায় রয়েছে নাকি এর কিছু অপকারিতাও
বিদ্যমান। উত্তর হল অবশ্যই কিঞ্চিত হলেও অপকারিতা রয়েছে।
দূর্বা ঘাস যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য পিত্তথলি যকৃত সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ঠিক একই ভাবে দূর্বা ঘাসের অতিরিক্ত সেবনের
ফলে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম।
এছাড়াও দূর্বা ঘাসের রস অনেক শীতল হওয়ায় অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা
দেখা দিতে পারে।
দূর্বা ঘাস চাষ
পুকুর, এবং রাস্তাঘাটের ধারে সাধারণত দূর্বা ঘাসের বেড়ে ওঠা। যেটি সম্পূর্ণ
প্রাকৃতিক উপায়ে বেড়ে ওঠে। কিন্তু আপনি চাইলে দূর্বা ঘাসের চাষ ও করতে
পারবেন। অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে উন্নত জাতের দূর্বা ঘাসের বীজ পাওয়া
যায়। এবং এই উন্নত জাতের বীজগুলো পুকুর, বাদ ও রাস্তাঘাটের মাটি ধরে রাখতে
সক্ষম। এছাড়াও খেলাধুলার মাঠে এই উন্নত জাতের দূর্বা ঘাসের বীজ বপন
করতে পারবেন।
দূর্বা ঘাসের রস খেলে কি হয়
আয়ুর্বেদের তথ্য অনুসারে যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আধা গ্লাস দূর্বা
ঘাসের রস খেতে থাকেন তাহলে পেটের পাকস্থলীর নানান সমস্যা যেমন অতিরিক্ত
গ্যাস সহ কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।
দূর্বা ঘাস কেন পূজায় লাগে
হিন্দু ধর্মের প্রত্যেকটি পূজা সহ বিয়ে এমনকি অন্নপ্রাশনেও দূর্বা ঘাসের
ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ প্রত্যেকটি শুভ কাজে দূর্বা ঘাসের ব্যবহার
করে থাকে হিন্দু ধর্মের মানুষেরা। পৌরাণিক শাস্ত্রে বলা হয়ে থাকে ওসুরে এবং
গণেশের যুদ্ধের সময়, অসুর গণেশের দিকে অগ্নিকুণ্ডলী নিক্ষেপ করে এর ফলে গণেশের
পেট ফুলে যেতে থাকে এবং উত্তপ্ত হয়ে পড়ে।
যাক কেউ ভালো করতে পারছিল না ঠিক সে সময় একজন ঋষি তার মাথায় ২১ টি দূর্বা
ঘাস রাখেন এবং গণেশ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে পড়ে। মূলত এজন্য হিন্দু ধর্মের
প্রত্যেকটি শুভ কাজে দূর্বা ঘাসের ব্যবহার দেখা যায়।
আমাদের কথা
দূর্বা ঘাসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা পূর্বের সব কিছু জেনেছি।
প্রত্যেকটি মানুষের শারীরিক অবস্থা আলাদা হয়ে থাকে যার ফলে সবকিছু তার শরীরের
সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। এর জন্য দূর্বা ঘাস খাবার
পূর্বে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url