আজওয়া খেজুরের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আমরা আজওয়া খেজুরের নাম শুনলেই মুগ্ধ হয়ে যাই। আজ আমি আপনাদের সাথে আজওয়া খেজুরের উপকারিতা ও আসল আজোয়া খেজুর কিভাবে চিনবেন সেই সম্পর্কে আলোচনা করব। আজওয়া খেজুর ইসলাম ধর্মের দিক থেকে বিখ্যাত আজওয়া খেজুরে রয়েছে ভিটামিন ফাইবার সহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণ। কিন্তু আমাদের জন্য আসল আজওয়া খেজুর চেনা দুষ্কর হয়ে পড়ে। আজওয়া খেজুর হলো বিশেষ গুণসম্পন্ন একটি খেজুর এর উৎপত্তি মূলত সৌদি আরবের মদিনাতে।

এটি মিষ্টি স্বাদযুক্ত ও নরম হয়ে থাকে এবং আজওয়া খেজুরের একটি বিশেষ পুষ্টিগুণ রয়েছে যা পৃথিবীতে অন্য কোন ফলের ক্ষেত্রে নেই। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেই আসল আজোয়া খেজুর চেনার উপায় কি এবং আজোয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা কি।

নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুনঃ

আজওয়া খেজুর কি

ছোট আকৃতির দেখতে অনেকটা জামের মত ওপরে কালো আস্তরণ এবং মিষ্টি স্বাদযুক্ত খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণের সমৃদ্ধ এ আজওয়াব খেজুরের উৎপত্তি মূলত মদিনা শহরে। অন্যান্য খেজুরের তুলনায় আজওয়া খেজুরের দাম অনেক বেশি। হাদীস শরীফে আজওয়া খেজুরের বিশেষ পুষ্টিগুণ ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও একে জান্নাতি ফল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এই বিশেষ প্রকারের আজওয়া খেজুরে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি বিশেষ খাদ্য পণ্য এবং রমজান মাসে ইফতারের সময় এ খেজুর খেয়ে থাকেন।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

আপনারা হয়তো সবাই আজওয়া খেজুর সম্পর্কে জানেন কিন্তু কোনটি আসল আজওয়া খেজুর সেটির সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারেন না। আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় কি? আসল আজওয়া খেজুর চেনার সহজ উপায় হল এতে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় এর স্বাদ, আকার আকৃতি এবং এর উপরের রং দেখে। ২০২৪ সালে আসল আজওয়া খেজুর চেনার কিছু সহজ উপায় তুলে ধরা হলো।

  • রঙঃ মূলত আসল আজওয়া খেজুর দেখতে গারো কালো রঙের হয়ে থাকে। যদি এটি দেখতে ফ্যাকাশে বা ফিকে রঙের হয়ে থাকে তাহলে এটি নকল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি অথবা নষ্ট খেজুর।
  • স্বাদঃ আসল আজওয়া খেজুরের স্বাদ মিষ্টি এবং এ খেজুর খাওয়ার সময় মিষ্টি ও তিক্ততার সাধের মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। যা অন্যান্য খেজুরের স্বাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
  • আকার ও আকৃতিঃ আসল আজওয়া খেজুরের আকার একটু ছোট ও গোলাকার হয়। যদি খেজুরের আকার বড় ও গোলাকার না হয় তবে সেটি আসল নাও হতে পারে।
  • বাহ্যিক গঠনঃ আসল আজওয়া খেজুরের বাইরের দিকটা মসৃণ ও কোন ফাটল বা দাগ থাকে না। যদি বাজারে দেখা কোন খেজুরের গায়ে ফাটল বা দাগ দেখা যায় বা অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে সেটি আসল নাও হতে পারে।
  • উৎপাদনী স্থানঃ আসল আজওয়া খেজুরের উৎপত্তি মদিনা শহরে। তাই খেজুর কেনার সময় অবশ্যই প্যাকেজের গায়ে মদিনা শহরের নাম উল্লেখ রয়েছে কিনা খেয়াল রাখবেন।
  • মূল্যঃ আসল আজওয়া খেজুরের মূল্য সাধারণ খেজুরের তুলনায় অনেক বেশি। যদি কেউ কম দামে আপনার কাছে বিক্রি করতে চাই তাহলে সেটি সন্দেহজনক পূর্ণ এবং আসল নাম হতে পারে।
  • প্যাকেজিংঃ আজওয়া খেজুর কেনার পূর্বে অবশ্যই কিউআর কোড স্ক্যান করে নিবেন এবং দেখবেন সেটি মদিনাতে উৎপন্ন কিনা।

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা

আজওয়া খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম যার শরীরে অতিরিক্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাই। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। ইসলাম ধর্ম অনুসারে হাদীস শরীফে আজওয়া খেজুর কে মহা ঔষধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নিয়মিত আজওয়া খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের যে উপকারিতা আসে
  • এই খেজুর খেলে ফুসফুস ভালো থাকে এবং ক্যাভিটি ক্যান্সারকে শরীর থেকে দূরে রাখে।
  • গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে আজওয়া খেজুর খেলে সহজেই জরায়ু মাংসপেশী সংকোচন ও প্রসারিত হয় যার ফলে প্রসব হতে সাহায্য করে।
  • প্রসবের পরবর্তী সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পাকস্থলী সুরক্ষিত রাখে।
  • আজওয়া খেজুর রয়েছে পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেলে স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • ভিটামিন এ সমৃদ্ধ হওয়ায় দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • আজওয়া খেজুর খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
  • যৌন রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম

মূলত আজওয়া খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অনেক রোগ থেকে নিস্তার লাভ করতে সহায়তা করে। কিন্তু আমরা সঠিকভাবে বা সঠিক নিয়ম সম্পর্কে অবগত নয় যে কিভাবে খেতে হয়। সাধারণত সকালে খালি পেটে পাঁচ থেকে সাতটি আজওয়া খেজুর খেলে সব থেকে বেশি উপকারে আসে।

সকালে খালি পেটে খাওয়ার ফলে এটি পুষ্টিগুণ সমূহ অতি দ্রুত সর্ব শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা। এবং নিয়মিত সকালে খালি পেটে খাওয়া।

আজওয়া খেজুর দাম

আসল আজওয়া খেজুরের দাম মূলত আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি পর্যন্ত হতে পারে। যা অন্যান্য খেজুরের নামের তুলে নাই বেশি। যদি কোন দোকানে আপনাকে এর তুলনায় কম দামে আজওয়া খেজুর বিক্রি করতে চাই তাহলে সেটি আসল নাও হতে পারে। মূলত এটি সৌদি আরব থেকে আমদানি করা হয় এবং এর চাহিদা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হওয়ায় এর দাম অন্যান্য খেজুরের তুলনায় অনেক বেশি।

খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয়

প্রিয় পাঠক খেজুরের গুনাগুন বলে শেষ করা সম্ভব নয়। যাদের শরীরে আইরনের ঘাটতি রয়েছে অর্থাৎ শরীরে আয়রনের পরিমাণ অতিরিক্ত কমে এসেছে তারা যদি নিয়মিত দুই থেকে তিনটি খেজুর খেয়ে থাকেন তাহলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

এছাড়াও যে সকল পুরুষ ও নারী দৈহিক সমস্যায় ভুগছেন তারা যদি নিয়মিত খেজুর গ্রহণ করে থাকেন তাহলে অভ্যন্তরীণ সকল সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়াও পুরুষের বীর্য যদি পাতলা হয়ে থাকে সেটি ঘন করতে সাহায্য করে এবং নারীদের ক্ষেত্রে সাদা স্রাব সমস্যার মুক্তি প্রদান করে।

প্রতিনিয়ত খেজুর খেলে অনেক পুরুষের শারীরিক যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো থেকে মুক্তি পাবে। দৈনিক দুধের মধ্য দিয়ে খেজুর খাবেন তাহলে বীর্য ঘন হবে এবং নতুন শুক্রাণু সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। প্রাচীনকাল থেকে খেজুর খাওয়ার প্রথা বিদ্যমান রয়েছে এবং বর্তমানে বৈজ্ঞানিক দ্বারা প্রমাণিত খেজুরের পুষ্টিগুণ অপরিসীম।

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি ছিল মূলত আসল আজওয়া খেজুর চেনার সহজ উপায় এবং আজোয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি আপনারা সকলেই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে খেজুর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন। এবং আসল আজওয়া খেজুর চিনতে আর ভুল করবেন না। তাই আজকের আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ওয়েবসাইট থেকে ফলো করে রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url