শোক দিবসকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয় কেন?

শোক দিবসকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয় কেন ?বিষয়টি সম্পর্কে কি আমারা সকলে অবগত? জাতীয় শোক দিবসে কালো রংয়ের ব্যাস পড়া হয়ে থাকে কিন্তু কেন কালো ব্যাস পড়া হয় এই সম্পর্কে কি আপনাদের জানা আছে?
আপনি যদি জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুন:

শোক দিবসকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয়েছে কেন

শোক দিবসকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয়েছে কেন এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। কারণ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কারণে দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের অন্যতম কিছু জাতীয় দিবসের মধ্যে একটি হলো জাতীয় শোক দিবস। সাধারণত পুরা জাতি যখন একটি নির্দিষ্ট দিনকে পালন করে তখন তাকে জাতীয় দিবস বলা হয়ে থাকে।

জাতীয় শোক দিবস মূলত ১৫ই আগস্ট পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনটি বাংলাদেশ ও বাঙালির জাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন অপরদিকে বলা হয়ে থাকে একটি জঘন্যতম দিনও। কারণ এই দিনে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এর জন্য এ নির্দিষ্ট দিনটিকে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে।

আমরা জানি বাংলাদেশ স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। লাখো বাঙালির সামনে থেকে তিনি সঠিক নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন যার ফলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। কিন্তু কিছু সেনা সদস্যের চক্রান্তে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ গড়ার যে আশা ছিল তা পূরণ করতে দেয়নি।

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এক গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ বাসভবনে সপরিবারে তাদেরকে হত্যা করা হয়। আর এই কারণেই 1975 সালের পরবর্তী থেকে ১৫ ই আগস্ট কে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

জাতীয় শোক দিবসে কালো ব্যাচ পরা হয় কেন

জাতীয় শোক দিবসে কালো ব্যস্ত করা হয়ে থাকে কেন এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নয়। সাধারণত যখন কোন শোকের দিন উদযাপন করা হয়ে থাকে তখন দেখা যায় সকলেই কাল কালারের ব্যাস পরিধান করে থাকে।কিন্তু কেন এই কালো কালারের ব্যাস পরিধান করে সেটা কি আপনি জানেন যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

প্রাচীন কাল থেকেই কালো রঙের কাপড়কে শোকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মূলত উইলিয়াম শেক্সপিয়ার প্রথম কালো রঙের কাপড়কে শোকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। ইতিহাস থেকে এর নির্দিষ্ট সময়কাল সম্পর্কে এখনো কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নাই। তবে রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম কালো রংয়ের কাপড় কে শোকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। 

এর জন্য এর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশে কালো রঙের কাপড়কে শোকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

জাতীয় শোক দিবস কেন পালন করা হয়

আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রত্যেক বছরের 15ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি কি জানেন কেন এই ১৫ই আগস্ট কে জাতীয় শোক দিবস বলা হয়ে থাকে? মূলত ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের মহান নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার নিজ বাসভবনে দুর্বৃত্তরা সপরিবারে হত্যা করেছিল।
যা ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। এর মাধ্যমে দুর্বৃত্তরা চেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বাদ করতে এবং বাংলাদেশের সকল অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে। মূলত এই মহান দেশরত্ন এবং দেশের নায়ক কে হত্যা করার জন্যই ১৫ই আগস্ট কে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবং তার পরবর্তী সময়কাল থেকে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়ে থাকে পুরো দেশে।

জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় কিভাবে

জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় কিভাবে এ বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। যে যার মত করে পালন করে থাকি। যেহেতু শোক দিবস একটি শোকাহত দিন তাই এই দিনে কোন ধরনের গান-বাজনা ব্যতীত এই দিনটিকে উদযাপন করা হয়ে থাকে। এই দিনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধ উত্তোলন করা হয়ে থাকে এবং সকালের সূর্য উদয়ের পরে কালো রঙের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এই দিনটাতে তার বাবার সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়াতে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা বরণ করে। এবং মৃত ব্যক্তিদের কথা স্মরণ করে তিনি তাদের জন্য দোয়া করেন। এছাড়াও এই দিনে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মসজিদ মাদ্রাসাতে জোহরের নামাজের পরে সব মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে দোয়া করে থাকেন। এ ছাড়াও এই দিনে পুরো বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আমাদের করণীয়

আমরা পূর্বেই জেনেছি কেন জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। মূলত এই দিনটিতে বাংলাদেশের প্রধান মহানায়ক এবং যিনি বাংলাদেশের গর্ব ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙ্গালীদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিটি জনগণের মনের ভিতর সাহস যোগিয়েছিলেন। সেই মহান নায়কের মৃত্যুবার্ষিকীকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয়ে থাকে।
এই দিনটিতে আমাদের বিশেষ কিছু করণীয় রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গড়তে এবং দেশের মানুষের উন্নতির স্বার্থে তিনি সকল কিছু করে গিয়েছেন। যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে তার আরো অনেক কিছু করার ইচ্ছা ছিল দেশের জন্য কিন্তু 1975 সালের 15 আগস্টের কালো রাত্রের জন্য তিনি আর কিছুই করতে পারেননি। তাই আমাদের উচিত তার অপূর্ণ ইচ্ছা গুলোকে পূর্ণতা দেওয়া।

এবং আমাদের দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং দেশের উন্নয়নের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করে দেওয়া। যেন আর কোন স্বৈরাচারীর শাসক এ দেশের রাজত্ব করতে না পারে সেজন্য নিজের দেশকে রক্ষা করা আমাদের মূল্য লক্ষ।

আমাদের কথা

শোক দিবসকে জাতীয় শোক দিবস বলা হয়েছে কেন এ বিষয়টি সম্পর্কে আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি। আপনি যদি বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হয়ে থাকেন এবং নিজেকে একজন বাঙালি হিসেবে দাবি করেন তাহলে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে বাঁচতে হবে।

কারণ তিনি দেশের জন্য যা করেছেন অন্য কোন নেতা অথবা অন্য কেউ তা করতে কখনোই সক্ষম হয়নি। তাই আমরা তার অবদান কখনোই ভুলতে পারে না এর জন্য আজীবন আমরা তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করব। এবং আমাদের সন্তানকে শিক্ষা দেব একজন আদর্শ নেতা কি কি গুন থাকতে হয় যা সব গুলো রয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url