গর্ভাবস্থায় কদবেল কেন খাবেন? কদবেল খাওয়ার উপকারিতা।

দেশীয় ফলের মধ্যে কদবেল আমাদের কাছে অতি সুপরিচিত একটি ফল। এই ফল খেতে হালকা টক স্বাদ যুক্ত হওয়ায় এটি সকল বয়সের মানুষের কাছে পছন্দনীয়। কদবেলে বিদ্যমান পুষ্টি সমূহ মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী। পাকা কদবেলে রয়েছে আমিষ শর্করা ভিটামিন বি ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় সুস্থ সবল দেহ গঠনে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় কদবেল কেন খাবেন এবং কদবেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ পরুন।

নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুনঃ

 

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা

আপনারা সকলেই গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ফল খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কদবেল খেতে সুস্বাদু ও মুখরোচক। এই ফল খেতে যেমন সুস্বাদু এর সঙ্গে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ সুস্বাস্থ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কত জল খাওয়ার উপকারিতা ভালোভাবে আমরা লক্ষ্য করতে পারি।

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা সমূহঃ

শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ গর্ভবতী অবস্থায় একজন মায়ের শরীর স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে। এমন অবস্থায় যদি আপনি কদবেলের শরবত পান করে থাকেন তাহলে তাপমাত্রা কমে আসে।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: কদবেলের সাধারণত পটাশিয়াম নামক উপাদান বিদ্যমান থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় কদবেল খেলে হার্টের রক্ত চলাচল ও সঠিকভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। তাই গর্ব অবস্থায় কত দল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য এবং হার্টের জন্য উপকারী।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ সাধারণত কদবেলে বিদ্যমান ফাইবার খাবার হজমের সহায়তা করে। কদবেল ফাইবার ও আস যুক্ত হওয়ায় গর্ভাবস্থায় কত জল খেলে গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের চেহারা পূর্বের তুলনায় অনেকাংশের নষ্ট হয়ে যায়। গর্ভবতী মা যদি নিয়মিত কদবেল খেয়ে থাকে তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। কারণ কদবেলে রয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
খাবার রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের সাধারণভাবে খাবার রুচি অনেক অংশে কমে যায়। কিন্তু কদবেল টক ও মুখরোচক একটি খাবার হওয়ায় এটি খেলে যেমন মুখের রুচি বাড়ে ঠিক একইভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যার ফলে খাবার রুচি অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।

কদবেল এর উপকারিতা

কদবেলে রয়েছে ভিটামিন এ বি সি সহ বিভিন্ন উপাদান সুস্বাস্থ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কদবেল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিশেষ করে মেয়েদের স্তন ক্যান্সার ও জরায়ুর রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। পেটের সমস্যা ও ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কদবেন। কদবেলের উপকারিতা আমরা আরো লক্ষ্য করতে পারি মৌসুমী হালকা জ্বর বা সর্দি কাশিতে। কদবেলের আরো উপকারিতা হলো এটি হার্ট সুস্থ রাখে এবং খাবার রুচি বৃদ্ধির সহ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

পেটের রোগ নিরাময়ঃ কদবেলে রয়েছে ট্যানিন নামক উপাদান যা পেটে ব্যথা সহ ঘন ঘন ডায়রিয়া সমস্যার সমাধান করে। কদবেলের সঙ্গে যদি এলাচ গোল মরিচ এবং মধু মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে পেটের বদহজম কমে যায় এবং পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। নির্যাস করে শরবত বানিয়ে খেলে অর্শ রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ কদবেল বিশেষ করে মহিলাদের স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কদবেলে থাকা বিভিন্ন উপাদান মহিলাদের দেহের হরমোনের অভাব দূর করে এবং যৌন হরমোন সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ পাকা কদবেলের সাজ নিয়মিত কয়েকদিন খেলে দেহে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার ফলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়। এছাড়াও রক্তে যদি বিভিন্ন ধরনের দোষ ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে তা পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়।

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া যাবে কিনা

আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া যাবে কিনা। উত্তর হল গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া যাবে সাধারণত একজন গর্ভবতী মহিলার টক জাতীয় খাবার খেতে অনেক পছন্দ করে। সে ক্ষেত্রে কদবেল হতে পারে অন্যতম একটি খাবার কারণ এটি টক যুক্ত। এছাড়াও কদবেল বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণের সমৃদ্ধ যার ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় কদবেল খেলে পেটের রোগ নিরাময়, ক্যান্সার প্রতিরো্‌ রক্তস্বল্পতা দূর, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহ হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার নিয়ম

কদবেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো একটি বড় কদবেল ভেঙে তার ভিতরের সকল উপাদান বের করে নিয়ে সেখানে পরিমাণ মতো বিট লবণ, পরিমাণ মতো চিনি, এক থেকে দুই চা চামচ মরিচের গুড়া, ১ থেকে ২ চা চামচ চট মসল, এক থেকে দুই চা চামচ সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন এরপরে খেতে পারেন।

কদবেলে যেসব পুষ্টি উপাদান আছে

গর্ভাবস্থায় কত জল খাওয়া একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য সবথেকে উপকারী কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও আমিষ যা অন্যান্য ফলের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি। তাই গর্ভাবস্থায়ী কদবেল খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান থাকে।

ক্রমিক নং পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
ক্যালসিয়াম ৫.৯ মিলিগ্রাম
পানীয় অংশ ৮৫.৬ গ্রাম
খাদ্য শক্তি ৩৯ কিলো
আমিষ ৩.৫ গ্রাম
খনিজ ২.২ গ্রাম
শর্করা ৮.৬ গ্রাম
চর্বি ০.১ গ্রাম
আইরন ০.৬ গ্রাম
ভিটামিন সি ১৩ মিলিগ্রাম
১০ ভিটামিন বি ০.৮০ মিলিগ্রাম

কদবেল বেশি খেলে কি হয়

শক্ত খোলস দ্বারা আবৃত টক ও মিষ্টি স্বাদ যুক্ত এই দেশের ফলটিতে আম, আনারস ও আমলকির তুলনায় চার গুণ বেশি পরিমাণে আমিষ রয়েছে বেশি পরিমাণে কত বেল খেলে কি ধরনের উপকার পেতে পারি সে বিষয় নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

  • কদবেলের ট্যানিন নামক উপাদান রয়েছে। যা ঘনঘন ডায়রিয়া আমসহ পেটের নানা সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করে।
  • কদবেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আলসার ও পায়েলসের জন্য ভালো উপকারে আসে।
  • বেশি পরিমাণে কদ বেল খাওয়ার পরে শরীরের রক্ত পরিশোধন হয়।
  • কদবেল খেলে হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হার্ট পূর্বে তুলনায় আরো শক্তিশালী হয়।
  • রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে এবং বুক ধরফর অনেকাংশে কমে যায়।
  • মহিলাদের হরমোন জনিত সমস্যার সমাধান করে থাকে এবং স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ সক্ষম।

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার অপকারিতা

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে তার গর্ভকালীন সময়। তো আমরা এতক্ষণ পর বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু যে জিনিসের উপকারিতা রয়েছে অবশ্যই তার কিঞ্চিৎ পরিমাণ হলেও অপকারিতা রয়েছে। তাই এই সেনসিটিভ সময়ে বেশি পরিমাণে কদবেল খাওয়ার পূর্বে এর অপকারিতা সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার অপকারিতা সমূহ

  • গ্যাসের সমস্যা হতে পারেঃ গর্ভ অবস্থায় কদল খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী কিন্তু সেটি যদি মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • বদহজম হতে পারেঃ গর্ভাবস্থায় কদবেল খেলে যেমন হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ঠিক তেমনি অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নাই অর্থাৎ বেশি পরিমাণে কত দল খাওয়ার ফলে বদহজম হতে পারে।
  • এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ যাদের শরীরে পূর্ব থেকে এলার্জি যেন তার সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে কত বেল খাওয়ার ফলে গর্ভ অবস্থায় কদবেল খাওয়ার ফলে এলার্জিজনিত সমস্যা বিরূপ আকার ধারণ করতে পারে। 
  • বমি বমি ভাব হতে পারেঃ কদবেল অতিরিক্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হয় বাচ্চার বেশি পুষ্টি লাভের আশায় যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গর্ভাবস্থায় কদবে ল তাহলে বমি বমি ভাব হতে পারে তাই নিয়মের ভিতরেই খাওয়া উচিত।

আমাদের কথা

গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। এবং কেন গর্ভাবস্থায় কদবেল খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা আলাদা হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সকল খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এজন্য গর্ভাবস্থায় খাবার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের ভালো পরামর্শ গ্রহণ করবে এবং তারপরেই খাবেন। আমার এই তথ্যটি অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা তাই এখানে সম্পূর্ণ ভুল।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্নবোনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url